একাদশীর পারন নিয়ম

একাদশী

প্রশ্ন- একাদশী কী? একাদশী কেন এবং কীভাবে পালন করতে হয়উত্তর: একাদশী একটি সর্বোত্তম ব্ৰত যা পালন করার মাধ্যমে ভগবানকে সহজেই সন্তুষ্ট করা যায়। এই তিথি সকলের অভীষ্ট প্রদানকারী। এই ব্রত পালনে সর্বপ্রকার পাপ বিনষ্ট হয়। একে হরিবাসরও বলে। পদ্ম পুরাণে একাদশীর উৎপত্তি বর্ণিত হয়েছে। একবার ডগবান যখন যমলো পরিদর্শনে যান, সেখানে পাপীদের ভয়ংকর আক্রন্দন শুনে দয়ালু ভগবান একাদশী তিথি রূপ এক দেবী মূর্তিতে আবির্ভূত হন। এবং সকল পাপীদের একাদশী তিথিতে উপবাস থেকে হরি ভজনের উপদেশ দেন। ভগবানের নির্দেশে সেই পাপীরা একাদশী ব্রত পালন করে বৈকুষ্ঠ লোকে গমন করেন।

কোন একাদশী থেকে একাদশী পালন শুরু করবোএখানে ক্লিক করে ভিডিওটি দেখুন। আর দয়া করে আমাদের চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে ধর্ম প্রচারের জন্য সাপোর্ট করবেন।

একাদশীতে উপবাস থেকে ভগবানের নাম কীর্তন, জপ, ভগবদ্ সেবা আদি কর্মের মাধ্যমে সারাদিন অতিবাহিত করতে হয়। উপবাসে অসমর্থ ব্যক্তি জল, ফল, দুধ, আলু, পেঁপে,কাঁচা কলা প্রতি দিয়ে তৈরি সবজি ঘি অথবা সূর্যমুখী তেল দিয়ে রান্না করে ভগবানকে নিবেদন করে প্রসাদ খেতে পারেন। তবে অনাহারে থাকাটা মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। উপবাস শব্দের অর্থ নিকটে বাস। অর্থাৎ ভগবানের নিকটে বাস। একাদশী থাকার অর্থ হচ্ছে দেহগত চাহিদাগুলো খর্ব করে ভগবানের মহিমা কীর্তন, ভগবানের সেবা করে সময়ের সদ্ব্যবহার।

আরোও জানুনঃ

নাম জপ নিয়ম / প্রার্থনা বিধি এখানে চাপ দিন

একদশীতে পঞ্চ রবিশস্য অর্থাৎ ধান, গম, ভুট্টা, ডাল সরিষা এবং এগুলো থেকে উৎপন্ন জিনিস যেমন অন্ন, আটা, সমস্ত প্রকার ডাল, সরিষার তেল, সয়াবিন তেল দিয়ে তৈরি খাদ্য সামগ্রী বর্জন করতে হয়। কারণ দিন সমস্ত পাপ এই পঞ্চ শস্যে এবং থেকে প্রস্তুত খাদ্য সামগ্রীতে অবস্থান করে। নারদীয় পুরাণে আছেযানি কানি পাপানি ব্ৰহ্মহত্যা সমানি , অন্নমাশ্ৰিত্য তিষ্ঠন্তি সংপ্রাপ্তে হরিবাসরে অর্থাৎ হরিবাসরে সমস্ত পাপ অন্ন মধ্যে অবস্থান করে। তাই একাদশীতে অন্ন গ্রহণ করলে সাথে সাথে সমস্ত পাপও গ্রহণ করা হয়। একাদশী না করা হলে গোহত্যা, মাতৃ হত্যা, পিতৃ হত্যা, ব্রহ্ম হত্যা ইত্যাদি হত্যাজনিত পাপের ফল ভো করতে হয়। একাদশীর দিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে ভগবানের নিকট প্রার্থনা করতে হয় এবং এই ব্রত ভালোভাবে পালন করার জন্য ভগবানের নিকট প্রার্থনা জানাতে হয়। তারপর ব্রত শেষে পরের দিন পারনের নির্দিষ্ট সময়ে পূর্ব দিন যে সমস্ত দ্রব্য বর্জন ছিল সে সমস্ত দ্রব্য দিয়ে খাদ্য তৈরি করে ভগবানকে নিবেদন করে নিজেদের গ্রহণ করতে হয়। একাদশী তিথির পরের দিন যদি মহাদ্বাদশী থাকে তবে এই ব্রত দ্বাদশীতে করতে হয়। কখনই দশমী যুক্ত একাদশী পালন করা উচিত নয়।

ভোগ আরতির নিয়ম জানতে এখানে ক্লিক করে ভিডিও টি দেখুন। আর দয়া করে আমাদের চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে ধর্ম প্রচারের জন্য সাপোর্ট করবেন।

কাত্যায়ন স্মৃতিতে আছে আট থেকে আশি বছরের সকল নারীপুরুষের, বিধবাসধবা সবার একাদশী বত পালন করা আবশ্যক। সে দিন বেশি বেশি করে ভগবানের দিব্য নাম জপ, কীর্তন, ভগবানের সেবা করে কৃষ্ণ ভাবনাময় হয়ে দিন অতিবাহিত করা উচিত ২৬টি একাদশী আছে। তবে সাধারণত বছরে ২৪টি একাদশী পালন করতে হয় আটটি মহাদ্বাদশী আছে। মহাদ্বাদশী থাকলে একাদশীর উপবাস দ্বাদশী তিথিতেই পালন করতে হয়। ভগবান বিষ্ণু এই ব্রত পালনকারীর প্রতি অত্যন্ত প্রসন্ন হন এবং অভীষ্ট প্রদান করে থাকেন। চিকিৎসা শাস্ত্রেও বলা হয়েছে, মাসে এক বা দুই দিন যদি আমাদের পাকস্থলীকে আমরা কিছুটা বিশ্রাম দেই তবে পুনরায় তা পূর্ণ শক্তিতে কাজ করতে সক্ষম হয়।

একাদশী সম্বন্ধে জ্ঞাতব্যঃ সূর্যোদয়ের পূর্বে দুই মূহুর্ত অর্থাৎ ৯৬ মিনিট আগে যদি একাদশী তিথী থাকে তবে সে ক্ষেত্রে দিনই একাদশীর উপবাস করা বিধেয়। (গরুর পুরান শিব রহস্য বচন) ব্যখ্যা- যখন দেখা যায় একাদশী শুরু হয়েছে বুধবার সকাল .১৫ মিনিটে এবং ছেড়ে যাবে বৃহস্পতিবার সকাল .২৫ মিনিটে। তাহলে বৃহস্পতিবার একাদশী পালন করাই শুদ্ধা একাদশী। কারন উপরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সূর্যোদয়ের মুহুর্ত পূর্বে একদশী বর্তমান ছিল। কিন্তু বুধবার সূর্যোদয়ের দুই মূহুর্ত পূর্বে একদশী বিদ্যমান ছিলনা।

বিদ্ধা একাদশীঃ যদি একাদশী শুরু হয় বুধবার ভো .৪২ মিনিটে এবং ছেড়ে যায় শেষ রাত্রি .৫০ মিনিটে, তবে এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বুধবার সারাদিন একাদশী তিথি বর্তমান ছিল। কিন্তু একটু লক্ষ্য করলে দেখা যায় বুধবার সূর্যোদয়ের মুহুর্ত পূর্বে অর্থাৎ .২৯ মিনিটে একাদশী ছিল না। কারন একাদশী লেগেছিল .৪২ মিনিটে। অর্থাৎ তার আগে ছিল দশমী তিথি। তাই এটা দশমী বিদ্ধা একাদশী। এক্ষেত্রে শাস্ত্রে দশমী বিদ্ধা একদশী বাদ দিয়ে দ্বাদশী তিথিতে একাদশীর উপবাস থাকার বিধান দেওয়া হয়েছে।

প্রশ্ন : মাছ-মাংস খাওয়া যাবে না কেন?

উত্তর ; মাছ-মাংস বলে কোন কথা নয়, আসলে যা ভগবানকে নিবেদন করা যাবে না তা খাওয়া যাবে না! সকল কিছুই ভগবানের সম্পত্তি আর তার সম্পত্তি আমরা যদি তাকে না জানিয়ে ব্যবহার করি বা খাই; তাহলে আমি চোর সমতুল্য হয়ে গেলাম। কারণ অন্যের জিনিস না বলে কখনােই নিতে হয় না। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে (ব্রহ্ম খণ্ড/২৭/১৫, ১৬) বলা হয়েছে, “যে জন শ্রীকৃষ্ণকে অন্ন নিবেদন করে না তার অন্ন বিষ্ঠাসম! যে জল নিবেদন করে না তার জল মূত্র সম।” তাই ভগবানকে অবশ্যই নিবেদন করে খেতে হবে। যারা গৃহে থাকে তারা ভােগ আরতির মাধ্যমে নিবেদন করবে। আর বাহিরের থাকা হলে অথবা যে কোন কিছু খাওয়ার সময় শ্রী কৃষ্ণায় নম; বলে প্রণাম করে খেতে হয়। ভিগবান ক্ষুদ্রত নয়; তিনি মূলত আমাদের ভক্তি ও ভালবাসাই গ্রহণ করেন।

যারা নিয়মিত কফপ্ৰসাদ খায় তাদের কোন পাপ থাকে না। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে (ব্রহ্ম খণ্ড/২৭/২৯) বলা হয়েছে, যে বৈষ্ণব নিত্য কৃষ্ণ প্রসাদখায়, তার সকল পাপ-তাপ দূর হয়ে যায়। প্রথমে আহার শুদ্ধি, তারপর দেহ শুদ্ধি হয়, আর দেহশুদ্ধি না হলে আমরা কষ্ণভজন করব কিভাবে। তাহলে আমরা ভগবানকে কি কি নিবেদন করতে পারব। বলা হয়ে থাকে, যে দেবতা যে ফুল পছন্দ করে, গােবিন্দ পূজায় সাদা ফুল লাগে, কালী পূজায় লাল ফুল লাগে, শিব পূজায় ধুতুরা ফুল থাকে। যে যেটা ভালবাসে না তাকে সেটা দিলে, সে আরাে রুষ্ট হবে। আমাদের ভগবানকে নিবেদন করতেই হবে, আর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, কি তিনি গ্রহণ করেন। (গীতা ৯/২৬) পত্র, জল, ফুল, ফল এই গুলাে ভগবান গ্রহণ করে। আর ভগবান যা গ্রহণ করে না, তা নিবেদনও করা যাবে না , খাওয়াও যাবে না। কি কি ভগবানকে নিবেদন করা যাবে না; যেমন-মাছ, মাংস, পেয়াজ, রসুন, ডিম, মসুর ডাল, মাশরুম বা ছত্রাক, ভিনিগার, এছাড়া যে কোন নেশা দ্রব্য, যেমন-তামাক, মদ বা মাদক দ্রব্য, নেশার ঔষধ; ক্যাফিন যুক্ত চা, কফি, পানীয় (কোল ডিঙ্কস)।

আরোও জানুনঃ
বিবাহিত নারীদের সিঁদুর পরার কারন 
এখানে চাপ দিন

এছাড়া শাক-সবজি, দুধ, ফলমূল, ভাত, রুটি, ডাল সবই ভগবানকে রান্না করে প্রসাদরূপে খাওয়া যাবে। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে (ব্রহ্মখণ্ডে ২৭/৪৫, ৪৬) বলা হয়েছে ''ব্রাহ্মণেরা শ্বেত তাল, মসুর ও মৎস সমুদয় সব সময় ত্যাগ করিবে। কখনাে ভুলে মৎস ভক্ষণ করিলে প্রায়শ্চিত করে পরিশুদ্ধ হতে হবে।''

প্রশ্ন : ছােট ছােট ছেলে মেয়েরা যাদের কোন আধ্যাত্মিক জ্ঞান নেই, তারা কিভাবে কৃষ্ণভজন করতে পারে?

উত্তর : ছােট ছােট ছেলে-মেয়েরাই ভালভাবে কৃষ্ণভজন করতে পারে কারণ তাদের মন সরল। কুটিল বা জটিল মন মানসিকতার ব্যক্তিরা সহজে কষ্ণভজন করতে পারে না। ছােটরা থাকে সরল, তাই তারা রাধাকৃষ্ণের ছবি দেখে ভাবে তারা কত সুন্দর, আমিও তাদের পূজা করব, ছােটরা প্রসাদ খেতে ভালবাসে, গলায় তুলসীর মালা পড়তে ভালবাসে, সবার সাথে নেচে নেচে কীর্তণ করতে ভালবাসে। তাই বড়রা তাদের সহজ করে কৃষ্ণভজন শিখিয়ে দিলেই, সহজেই তা পালন করতে পারে। সরল না হলে ভগবানের রাজ্যে প্রবেশ করা যায় না। আর এই সরলমতি শিশুদের কুসঙ্গ থেকে সরিয়ে সযত্নে কষঃ সেবায় যুক্ত করতে হবে। তাদের বােধগম্য | করে রামায়ণ, মহাভারত, ভাগবতের ভক্তিমূলক কাহিনী নিয়মিত বলতে হবে। এজন্য বড়দের দক্ষ হতে হবে। বড়রা বা বাবা-মারা যদি ঠিকমত কৃষ্ণভজন না করে, তবে ছােটরা শিখবে কিভাবে। সাধারণত ছােটরা বড়দেরকে অনুকরণ করে | না। তাই বড়রা যদি অসৎ হয়ে থাকে নেশায় আসক্ত বা আমিষে আসক্ত থাকে, তাহলে ছােটরা তাে তাই শিখবে। কলির প্রভাবে ছােট ছােট ছেলে-মেয়েরাই অসৎ।

আর যারা জটিলমতির, তাদের দ্বারা সমাজের অবনতি ছাড়া উন্নতি হয় না। এক আচার্য বলেছেন একজন বয়স্ক পণ্ডিত ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: মশাই বলুন তাে ভগবান কে? সেটি খুব কঠিন তত্ত। খুব গভীর তত্ত্ব। সকলের পক্ষে বােঝা সম্ভব নয়। অথচ কাছেই ছিল এক বাচ্চা মেয়ে। তাকে জিজ্ঞেস করা হল, বল তাে-ভগবান কে?, অমনি সে চিৎকার করে বলতে লাগল কৃষ্ণ কৃষ্ণ! ভগবান কৃষ্ণ! ভাগবতের কথা, “কৃষ্ণস্ত ভগবান স্বয়ং তা পণ্ডিত ব্যক্তিটি জটিলবুদ্ধি হওয়ার জন্য বলতে না পারলেও সরলমতি বালিকাটি সহজে বলতে পেরেছিল।

প্রশ্ন : বাজারে অনেক ধর্মীয় বই পাওয়া যায়, আমাদের কোনগুলাে পড়া উচিত।

উত্তর : বাজারে অনেক রকমের ধর্মীয় বই পাওয়া যায়, তাই বলে সবগুলো আমাদের পড়া যাবে না। প্রথমত, আমাদের মূল ধর্মগ্রন্থ হচ্ছে গীতা। বাজারে বিভিন্ন লেখকের অনুবাদ করা গীতা পাওয়া যায়। ভগবানের বাণী সংস্কৃত শ্লোক সবগীতাতে একই কিন্তু জটিল বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি তাদের মনগড়া অনুবাদ এবং তাৎপর্য লিখে থাকে। এর মধ্যে অনেকের রয়েছে বিভিন্ন স্বার্থ বা নিজের প্রচার বা গীতার বক্তা ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে প্রতিষ্ঠা করা। পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের স্বয়ং বাণী হচ্ছে ভগবদ গীতা। তাই গীতার অনুবাদ তাৎপর্য সবই হবে কৃষ্ণ কেন্দ্রিক। তাই, গীতার ভাষ্য অনুবাদ করার অধিকার তারই যে শুদ্ধ কৃষ্ণ ভক্ত বা বৈষ্ণব। বাজারে এমন কিছু গীতা দেখা যায়, যার ভাষ্যকার হচ্ছে, একজন নিরাকারবাদী দেবদেবীর উপাসক বা অন্য কাউকে ভগবান বানিয়ে গীতার মাধ্যমে তাকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। তাই এই সমস্ত ব্যক্তির অনুবাদ করা গীতা কখনােই পড়া যাবে না।


অপরদিকে, আরেক ধরনের গ্রন্থ রয়েছে, যা ধর্ম বা ভগবান সম্পর্কে লেখা। ধর্ম ভগবানের সষ্ট আর ভগবান তাে ভগবানই, তাই আমি যদি কভুক্ত না হই, গীতা-ভাগবত সম্পর্কে কোন জ্ঞান না থাকে তাহলে কিভাবে। ধর্ম সম্পর্কে লেখা যায়। জ্ঞান দুই ধরনের, জাগতিক ও পারমার্থিক জ্ঞান। জাগতিক জ্ঞানে কেউ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা জজ ব্যারিস্টার হতে পারে কিন্তু কৃষ্ণভক্ত না হলে বুঝতে হবে সে পারমার্থিক জ্ঞানে মূখ। তাই পারমার্থিক জ্ঞানে মূখ হয়েও ভাবে আমি এত বড় চাকরী করি এখন আমার ধর্ম সম্পর্কে লেখার জ্ঞান হয়েছে। এরকম ধারণা আসুরিক কার্যকলাপ স্বরূপ। সত্যিকার অর্থে ধর্ম সম্পর্কে কিছু লেখা যায় না, ভগবান যা বলেছে হুবহু তাই, একটু সহজ করে ব্যাখ্যা করে দেওয়া মাত্র। কৃষ্ণভক্ত না হয়ে প্রামানীক গ্রন্থ থেকে জ্ঞান অর্জন না করে, আপন, পাণ্ডিতের মাধ্যমে কখনোহ। ধর্ম সম্পর্কে কোন কিছু লেখা উচিত নয় । এবং অভক্তের লেখা, যেখানে কৃষ্ণভক্তি শিক্ষা না দিয়ে কিভাবে কৃষ্ণভক্তি থেকে দুরে রাখা যায়, এই চেষ্টা করে অথবা কৃষ্ণ বাদ দিয়ে অন্য কেউ গুণগান করে, তাদের গ্রন্থ কখনােই পড়া উচিত নয়।

প্রশ্ন : বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মাছ-মাংস, বা মদ-গাজা হয়ে থাকে এটা কি ঠিক?

উত্তর : সনাতন ধর্মে মাছ-মাংস বা নেশা সম্পূর্ণ নিষেধ। আমরা ধর্মীয় নিষেধ অবজ্ঞা করে অবিরত আমিষ আহার নেশা ভঙ্গ করে যাচ্ছি। আমরা তাে অপকর্ম করে পাপ অর্জনতাে করছি আবার ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এই সমস্ত অপকর্ম বাদ না দেওয়ার কারণে আরাে দ্বিগুণ পাপ অর্জন করছি। যেকোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান যেমনপূজা-পাবন, অন্নপ্রসন, বিয়ে, শাদ্ধ এগুলাের মধ্যে কখনােই আমিষ বা নেশার আয়ােজন থাকবে না। ধর্মের নামে অপকর্ম শয়তানের কার্যকলাপ ! দূর্গা পূজার হিন্দি গান বা আজেবাজে গান বাজানাে হয়, মা দুর্গা কি এসব পছন্দ করে? গান বাজানাের ইচ্ছে থাকলে আমরা শ্যামাসঙ্গীত, কীৰ্ত্তণ বা ভক্তিমূলক গান বাজাতে পারি। পূজার মধ্যে কিছু বাজে ছেলে দেখা যায়, যারা মার সামনে মদ-গাজা খাচ্ছে? আমরা নিজের মার সামনে কখনােই মদ-গাজা খাই না, বা অশ্লীলভাবে নাচানাচি করি না, কিন্তু যে জগৎমাতা তার সামনে ঠিকই মদ-গাজা খাই, অশ্লীলভাবে নাচানাচি করি এর নাম কি পূজা। অনেকে আবার দশমীতে, তিন দিন আমিষ খাওয়া অভাবে মাংস নিয়ে কাড়াকাড়ি করে। অনেকে অন্নপ্রসনে মাছের ব্যবস্থা করে, এমনকি শাদ্ধের মধ্যে মৎসমুখী নাম করে মাছ-মাংস খায়।




এমনভাব যেন শাদ্ধের মধ্যে আমিষ খেতে হয়। কোন মাংসলােভী যেন বানায়ে ছিল আর তা এখনাে চলতেছে। যেমন-কোন এলাকায় সধবারা একাদশীর রাত্রীতে মাছ খেয়ে। থাকে। আবার বিয়ের মত একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান, যেখানে ভগবানকে সাক্ষী রেখে, সারাদিন উপবাস থেকে, বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে ছেলে মেয়েকে গৃহস্থ জীবনের অনুমােদন দেওয়া হয়। আর এই বিয়েতে মাছ-মাংস ছাড়া যেন চিন্তাই করা যায় না। তাহলে ধর্মের নামে আমরা যে অধর্ম করছি, এতে কি ভগবান। আমাদের উপর খুসি হবেন না বেজার হবেন, তা চিন্তা করার বিষয়।

2 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন