নাম জপ নিয়ম ও প্রার্থনা বিধি

নাম জপ নিয়ম / প্রার্থনা বিধি

নাম জপ হচ্ছে ভগবানের কাছে প্রার্থনা। কারণ হরে কৃষ্ণ শব্দের অর্থ হচ্ছেহে ভগবানের শক্তি (হরে), হে সর্বাকর্ষক ভগবান (কৃষ্ণ), হে পরম ভোক্তা (রাম) কৃপা করে আমাকে আপনাদের সেবায় নিয়োজিত করুন। আমরা সকাল-সন্ধ্যা জপ করি এর মানে হচ্ছে আমরা সকাল-সন্ধ্যা ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি। জপ করার পূর্বে পঞ্চতত্ত প্রণাম মন্ত্র বলতে হয়। প্রণাম মন্ত্র হল-

জয় শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ।
শ্রী অদ্বৈত গদাধর শ্রীবাসাদি গৌরভক্তবৃন্দ ।

পঞ্চতত্ত্ব প্রণাম করার পর 'হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ শুরু করতে হয় ।

কোন একাদশী থেকে একাদশী পালন শুরু করবো? এখানে ক্লিক করে ভিডিওটি দেখুন। আর দয়া করে আমাদের চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে ধর্ম প্রচারের জন্য সাপোর্ট করবেন। 


জপ মালায় জপ করাই সবচেয়ে ভাল, যারা মালা নিবেন তারা যার কাজ থেকে মালা নিবেন তার কাজ থেকে মালার নিয়ম শিখে নিবেন। যাদের এখনো মানা নেওয়া হয়নি তার হাতের কর গুণে জপ করতে পারেন। যেভাবে করবেন আপনার ডান হাতে বিশটি কর রয়েছে, পঞ্চতত্ত্ব প্রনাম করে, বৃদ্ধাঙ্গলি দিয়ে কনিষ্ঠার নীচের করটি ধরুন এবং পূর্ণভাবে হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র বলুন। বলা শেষ হলে পরের কর ধরুন এবং আবার বলুন, এভাবে বিশবার হয়ে যাবে। তখন অনুরূপভাবে বাম হাতের একটি কর ধরুন। পরে আবার ডান হাতে শুরু করুন এইভাবে ১০৮ বার করলে ১ মালা হয়ে গেল।



পুনরায় পঞ্চতত্ত্ব প্রণাম করে আবার শুরু  করুন দুই মালা হয়ে যাবে। প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা ১০৮ বার রে জপ করা সবার জন্য বাধ্যতামূলক। আমাদের প্রতিদিন সর্ব নিম্ন ১৬ মালা জপ করা উচিত। প্রভুপাদ সবাইকে ১৬ মালা জপ করতে বলেছেন। এক বা দুই মালা জপ করলে কোন কিছু তেমন উপলদ্ধি করা যায় না। যেমন গাড়ি যখন চলতে শুরু করে তখন তার গতিবেগ কম থাকে। একটানা সাত দিন ১৬ মালা জপ করলে সে নিজেই বুঝতে পাবে তার কতটুকু পারমার্থিক উন্নতি হয়েছে। জপ করতে হয় একটা জোরে জোরে, যাতে তার কান পর্যন্ত শব্দ আসে। গভীর নোযোগেসহিত আমরা যে হরে কৃষ্ণ বলতেছি তা শুনতে হবে, অন্য দিকে মন দেওয়া যাবে না ভগবানের নাম নেওয়ার নির্দিষ্ট কোন সময় নেই' এর অর্থ হচ্ছে চব্বিশ ঘণ্টাই কৃষ্ণভাবনায় যুক্ত থাকতে হবে। কৃষ্ণ নামের এতই শক্তি, তার নাম নিতে পবিত্র, অপবিত্র কোন জায়গা নেই, তার নামের গুণে সবই পবিত্র হয়ে যায়। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা মন্দিরে সমবেত ভাবে জপ করা উচিত। কারণ ভক্ত সঙ্গের প্রভাবে ভগবানের প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পায়।

শ্রাদ্ধ ও কুসংস্কারঃ 

এখানে ক্লিক করুন

যত মত তত পথ

 এখানে ক্লিক করুন

ওঁ এর অর্থ কী

 এখানে ক্লিক করুন

এই হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র গোলকে অতি সংগোপনে রক্ষিত ছিল- জীবকুলের মুক্তির জন্যেই নিয়ে এলেন চৈতন্য মহাপ্রভু শুধু নামেই মুক্তি, একথা তিনি জীবের ঘরে ঘরে প্রেমানন্দে বিলিয়ে দিয়ে কলিযুগের অধমগতি জীবের মোক্ষলাভের পথ সহজতর করে দিলেন। হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র বলা হয়, কারণ ভগবানের দিব্য নাম দুভাবে উচ্চারণ করা যায়। মন্ত্র গাওয়া, যাকে বলা হয়। কীৰ্ত্তন এবং নিজে শোনার মত করে মৃদুস্বরে উচ্চারণ, যাকে বলা হয় জপ ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র বলেছেন, “যে ঘরে সকাল-সন্ধ্যা হরে কৃষ্ণ কীর্তন হয় না, সে ঘরকে শ্নশান বলে জানবে।সমবেতভাবে কীৰ্ত্তন করতে হয় । সপরিবারে বা বন্ধু বান্ধবদের সংগে এক সাথে প্রানবন্ত কীৰ্ত্তন প্রত্যেককে আনন্দোল করে তোলে, এক দিব্য আনন্দময় পরিবেশ তৈরী হয়।

তুলসী আরতি বিধি প্রণাম মন্ত্র জানতে এবং শিখতে নিচের ভিডিও টি দেখুন। অথবা এখানে ক্লিক করে ভিডিওটি দেখুন। আর দয়া করে আমাদের চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে ধর্ম প্রচারের জন্য সাপোর্ট করবেন।

হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ শুরু করার পূর্বে শ্রীগুরু প্রণাম মন্ত্র এবং পঞ্চতত্ত্ব মন্ত্র উচ্চারণ করতে বিস্মৃত হওয়া উচিত নয়। জপ করার পরিবেশ এমন হওয়া উচিত, যাতে কোন কারণে মনসংযোগের বিঘ্ন হতে না পারে। মন্দিরে সবাই একসাথে বসে জপ করতে হয়। জপ করার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হচ্ছে খুব ভোরেকর্মক্ষেত্রে যাওয়ার পূর্বে কয়েক মালা জপ করে যেতে হয়। ভগবানের সেবা সর্বপ্রথম শুরু হয় জিহ্বা দিয়ে, কারণ জিহ্বা দিয়ে আমরা ভগবানের দিব্য নাম করে থাকি। অনেকে বলে সবইতো ভগবানের দিব্য নাম, এক নামে তাকে ডাকলেই হলো, এতে কোন সমস্যা নেই কিন্তু যে নামে কৃষ্ণের প্রতি প্রেম উদয় হয়, গভীর শ্রদ্ধা ও ভাল হয়, গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা উদয় হয় সে নামেই ডাকা উচিত। হরে কৃষ্ণ নামে সহজেই কৃষ্ণের প্রতি প্রেম উদয় হয়। শাস্ত্রে বলা হয়েছে ভগবানের অনন্ত কোটি নাম থাকা সত্ত্বেও কৃষ্ণ নামটি মুখ্য। আমরা যখন সংকীৰ্ত্তন করি তখন হরে কৃষ্ণ ছাড়া অন্য কিছু বলা যায় না।

হরে কৃষ্ণ জপ করতে করতে কতটুকু প্রেম উদয় হলে দিনে ৩ লক্ষ বার জপ করা সম্ভব, যবন হরিদাস হচ্ছে তার প্রমাণ।

আবার  কৃষ্ণের প্রতি টান না হলে সারাজীবন জপ করলেও কোন লাভ নেই। কারণ কৃষ্ণ বিহীন যার চলন, ছিন্ন ভিন্ন তার জীবন। কৃষ্ণকে এক মুহূর্তের জন্যও ভুলা যাবে না। অনেকে বলে সকালে জপ করতে ভুলে গেছি, বা সন্ধ্যায় ভুলে গেছি। শ্রীকৃষ্ণের প্রতি যদি ভালবাসা থাকে তবে সে কখনোই ভুলতে পারবে না। আমরা তিন বেলা খেতে ভুলি না, ঘুমাতে ভুলি না কিন্তু ভগবানের নাম করতে ভুলে যাই?

আমার এক বন্ধু একটি মেয়েকে ভালবাসত, সে মাঝে মাঝেই ২০০ মাইল অতিক্রম করে মেয়েটিকে দেখতে আসত। তার কত টাকা খরচ হত, কত সময় নষ্ট হত, তবু মেয়েটির মোহে সব কিছু বিসর্জন দিতে দ্বিধাবোধ করত না, পরিণামে কষ্ট পাবে তা জেনেও। ঠিক তেমনি আমরা যদি কৃষ্ণকে ভালবাসি তবে কৃষ্ণের জন্য সবই করতে পারব, পরিণামে পাব দিব্য আনন্দ। আর  ক্ষা  কর্তা হিসেবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পাশে থাকবেই। যে যত কৃষ্ণকে ভালবাসতে পারে সে তত বড় কৃষ্ণভক্ত ।

দেব দেবী পূজার রহস্য

 জানতে এখানে ক্লিক করুন

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন