ভগবদগীতা-সম্পর্কে ৪০ টি প্রশ্ন ও উত্তর

ভগবদগীতা-বিষয়ক, গীতা পাঠ, বাংলা গীতা, গীতার মুল কথা, গীতা সারংশা, গীতার প্রশ্ন, গীতা বাণী,
 ভগবদগীতা-বিষয়কআশা করি নতুনদের গীতার তাৎপর্য বুঝতে সহজতর হবে।

১। ভগবদগীতা কোন পাত্র থেকে উদ্ধৃত ?  

উঃ ভগবদগীতা মহাভারতের ভীষ্মপর্বের একটি অংশ। ২৫ অধ্যায় থেকে ৪২ অধ্যায় পর্যন্ত এই ১৮ টি অধ্যায়কে শ্রীমদ্ভগবদগীতা বা গীতোপনিষদ বলা হয় ।
২। ১৮ অধ্যায় সমন্বিত ভগবদগীতাকে বৈষ্ণব আচার্যর মুখ্যতঃ কয়ভাগে বিভক্ত করেছেন ?  সেগুলি কি কি ?  
উঃ ১৮ অধ্যায় ভগবদগীতাকে মুখ্যতঃ তিনভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। প্রথম ৬টি অধ্যায় (১ম-৬ষ্ঠ) কে বলা হয় কর্মষটক, মাজের ৬টি অধ্যায় (৬ষ্ঠ -১২শ) কে ভক্তি-ষটক বলা হয় এবং শেষ ৬টি অধ্যায়কে (১৩শ-১৮শ) বলা হয় জ্ঞান ষটক।
প্রত্যেক ঘটকের মধ্যে টি অধ্যায়ের নাম কি কি?  
উঃ কর্মষটক - (১) বিষাদযোগ, (২) সাংখ্যযোগ, (৩) কর্মযোগ, (৪) জ্ঞানযোগ, (৫) কর্ম-সন্ন্যাস-যোগ, (৬) অভ্যাসযোগভক্তিষট - (১) বিজ্ঞান -যোগ, (২) অক্ষর ব্রহ্মযোগ, (৩) রাজগুহ্য যোগ, (৪) বিভূতি-যোগ, (৫) বিশ্বরূপ-দর্শনযোগ, (৬) ভক্তিযোগজ্ঞানষটক - (১) প্রকৃতি-পুরুষ বিবেক-যোগ, (২) গুণত্রয় বিভাগ যোগ, (৩) পুরুষাত্তম যোগ, (৪) দৈবাসুর-সম্পদ বিভাগ যোগ, (৫) শ্ৰদ্ধাত্রয় বিভাগ যোগ (৬) মাক্ষ যোগ
৪। শ্ৰীমদভগবদগীতায় কোন পাঁচটি বিষয় বা তত্ত্ব মুখ্যতঃ আলোচিত হয়েছে?
উঃ ভগবদ্গীতায় জীৰ, ইশর, প্রকতি, কর্ম এবং কাল এই, পাচটি তত্ত্ব লোচিত হয়েছে।
৫। জ্ঞেয় কি ?  
উঃ জ্ঞানের বিষয়কে জ্ঞেয় বলে সেই জ্ঞেয় বস্তু জীবাত্মা অনাদি এবং ভগবানের আশ্রিত। তাকে বলা হয় বন্ধু এবং তা জড় জগতের কায কারণের অতীত। জীবাত্মা হচ্ছে বিজ্ঞান-ব্রহ্ম, শর বিপরীত হল আনন্দ ব্রহ্ম 'আনহ্ম' হচ্ছেন পরম ব্রহ্ম পরমেশ্বর ভগবান।

৬। পুরুষ কে ? 
উঃ শরীরের  মধ্যে অবস্থিত দেহের কর্মফলের ভোক্তা জীবাত্ম হচ্ছে পুরুষ! দেহে অবস্থিত জীবাত্মা হচ্ছে ক্ষেত্রজ্ঞ এবং আরেকজন ক্ষেত্রজ্ঞ হচ্ছেন পরমাত্মা। পরমাত্মা ও জীবাত্মা উভয়েই পরম পুরুষ ভগবানের ভিন্ন প্রকাশ। জীব হচ্ছে তার শক্তিতত্ত্ব এবং পরমাত্মা তার স্বয়ং প্রকাশ। জড়া প্রকৃতি ও জীব উভয়েই নিত্য। জড় জগতের সৃষ্টির পূর্বে তাদের অস্তিত্ব ছিল। পরমেশ্বর ভগবান থেকে জড়া প্রকৃতি প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু জীব হচ্ছে ভগবানের উৎকৃষ্ট শক্তি সস্তৃত। প্রকৃতি সমস্ত কার্য ও কারণের হেতু, পুরুষ অর্থাৎ জীব সমস্ত জড় জগতের সুখ দুঃখ উপলব্ধির কারণ।
৭। এই জীবাত্মারুপ সম্পূর্ণ কিরূপে ভোগ করে ?  
উঃ প্রকৃতির গুণের সঙ্গবশত পুরুষ বা জীবাত্মা সৎ অসৎ যোনিসমূহ ভ্রম করে। এইভাবে জড় প্রকৃতিতে অবস্থিত পুরুষ বা জীব প্রকৃতির গুণসমূহ ভোগ করে।
৮। পরমাত্মা কাকে বলা হয়
উঃ শরীরের মধ্যে জীবাত্মা ছাড়া আর এক পরম ভক্তা আছেন যিনি পরম ঈশ্বর, পরম প্রভু। তিনি সকলের সমস্ত কর্মের সাক্ষী এবং অনুমোদন কর্তা তাকেই বলা হয় পরমাত্মা । (পরমাত্মা সর্বব্যাপ্ত, তাঁর হস্ত ও পদ, চক্ষু, কর্ণ, মস্তক, মুখ সর্বত্র ব্যাপ্ত। পরমাত্মা সমস্ত ইন্দ্রিয়ের প্রকাশক, তথাপি তিনি সমস্ত ইন্দ্রিয়-বর্জিত। যদিও তিনি সকলের পালক, তথাপি তিনি সম্পূর্ণ অনাসক্ত। তিনি জড়া প্রকৃতির গুণের অতীত, তথাপি তিনি সমস্ত গুণের ঈশ্বর। তার থেকে উদ্ভূত হয়েছে সমস্ত চরাচর। তিনি জড় ইন্দ্রিয়ের অগোচর এবং অভিজ্ঞ। তিনি বহুদূরে অবস্থিত হয়েও সকলের অত্যন্ত নিকট। পরমাত্মাকে যদিও সর্বভূতে বিভক্তরূপে বোধহয়, কিন্তু তিনি অবিভক্ত। তিনি সর্বভূতের পালক, সংহারকর্তা, সৃষ্টিকর্তা। তিনি সকলের হৃদয়ে অবস্থান করেন।)
৯ যারা আত্মাকে জানতে পারেনা, তারা কিভাবে মৃত্যুময়সংসার অতিক্রম করতে পারবেন ?
উঃ সদগুরু ও আচার্যদের উপদেশ নিষ্ঠাসহকারে সাধন করার মাধ্যমে মৃত্যুময়  সংসারকে অতিক্রম করা যায়।
১০সমস্ত ভূতের সৃষ্টি হয় কি করে ?  
উঃ জীব হচ্ছে জড়া প্রকৃতি ও পরাপ্রকৃতির সমন্বয়। এই সময় ভগবানের ইচ্ছার মাধ্যমে সাধিত হয়। পরমেশ্বর ভগবান মহত্তত্ত্বে বীজ প্রদান করেন এবং তার ফলে অসংখ্য ব্রহ্মাণ্ডের প্রকাশ হয়। এই মহতত্ত্বকেও ব্রক্ষ বলা হয়। সেই মহত্ত্বরূপ ব্রহ্মের গর্ভে পরমপুরুষ ভগবান জীবাত্মা-সমূহকে সঞ্চারিত করেন। মহত্তত্তের ২৪টি উপাদানের সবকটি হচ্ছে মহৎ-বন্ধ নামক জড়া প্রকৃতি বা জড়াশক্তি, যা ভগবানের নিকৃষ্ট শক্তি। জড়া প্রকৃতির শক্তি। পরম পুরুষ ভগবানের ইচ্ছার প্রভাবে জড়া প্রকৃতি সেই পাপ্রকৃতিতে মিশ্রিত হয় এবং জড়া প্রকৃতিতে সমস্ত জীবের জন্ম হয়। এইভাবে প্রকৃতিসঙ্গক ব্ৰক্ষ এই জড় জগতের উৎপত্তির কারণ।
১১জীব কখন ত্রিগুণের দ্বারা আবদ্ধ হয় ?  
উঃ জীব যখন জড়া প্রকৃতির সংস্পর্শে আসে তখন সে এই ত্রিগুণের দ্বারা আবদ্ধ হয়, যেহেতু জড়া প্রকৃতি থেকে সত্ত্ব, রজঃ, তমঃ - এই তিনটি গুণ প্রকাশিত হয়।
১২অভা প্রকৃতির বিভিন্ন গুণগুলি কিরূপ ?  
উঃ সত্ত্বগুণ অপেক্ষাকৃত নির্মল, প্রকাশক এবং পাপশূন্য। রজোগুণ থেকে অন্তহীন, কামনা বাসনা উৎপন্ন হয়। তমোগুণ থেকে অজ্ঞানতা ও ভ্রান্তি উতপণ্ন হয়।
১৩কোন গুণ কিভাবে জীবকে আবদ্ধ করে
উঃ সত্ত্বগুণ জীবকেআমি সুখী’, এই প্রকার সুখাসক্তির দ্বারাও 'আমি জানি  এই প্রকার জ্ঞানাসক্তির দ্বারা আবদ্ধ করে। রজোগুণ জীবকে সকাম কনের বন্ধনে আবদ্ধ করে। ভমোগুন জীবকে প্রমাদ, আলস্য ও নিদ্রা দ্বারা আবদ্ধ করে।
১৪যিনি প্রকৃতির ত্রিগুনের অতীত তার লক্ষণ গুলি কি কি ?  
উঃ যিনি গুণাতীত তিনি কারোর প্রতি  দ্বেষযুক্ত নন, এবং তিনি কোনকিছুর আকাক্ষা করেন না। তিনি গুণের প্রভাবের প্রতি উদাসীন থাকেন।
১৫যিনি প্রকৃতির ত্রিশের অতীত তাঁর আচরণ কিরূপ ?
উঃ তিনি দেহসম্বন্ধীয় তথাকথিত সম্মান এবং অসম্মান দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে  কর্তব্য করেন। শত্রু ও মিত্রের প্রতি তিনি পক্ষপাতশূন্য। কৃষ্ণভক্তি অনুশীলনে যারা তাকে সাহায্য করে তাদের সকলকেই প্রিয়বন্ধু বলে মনে করেন, এবং তার তথাকথিত শক্রকেও তিনি ঘৃণা করেন না। তিনি নিজে ফলভভাগের জন্য কর্ম না করে কেবলমাত্র ভগবানের প্রতিবিধানের জন্য কর্ম করেন।
১৬নির্বিশেষ ব্রহ্মের আশ্রয় কে ?  
উঃ ভগবান শ্রীকৃষ্ণই নির্বিশেষ ব্রহ্মের আশ্রয়।
১৭উর্ধ্বমূল, এবং অধোশাখাবিশিষ্ট অশ্বথ বৃক্ষের সাথে কার তুলনা করা হয়েছে?  
উঃ জড় জগতের বন্ধনের সাথে তুলনা করা হয়েছে।
১৮। জড় জগৎ এর বন্ধনস্বরূপ উধ্বমূল ও অর্ধেশাখা বিশিষ্ট অশ্বথ বৃক্ষের বর্ণনা কর। 
উঃ (i)  যে এই বৃক্ষের প্রতি আসক্ত তার কোনদিন মুক্তিলাভ হয় না। (ii))মানুষকে উর্ধ্বমুখী করার জন্য যে বৈদিক ছন্দ সেগুলিকে এই বৃক্ষের পাতার সাঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। (iii) এই বৃক্ষের মূল উধ্বমুখী কারণ তার শুরু হয়েছে ব্রহ্মাণ্ডের সর্বোচ্চ লোক অর্থাৎ ব্রহ্মার অবস্থান ব্ৰহ্মলোক থেকে।  (iv))মোহমুক্ত হয়ে বৃক্ষটি সম্বন্ধে অবগত হলে বন্ধন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। (v) জলাশয়ের ধারে এইরূপ বৃক্ষের প্রতিবিম্ব দেখা যায় যার শাখাপ্রশাখা নিম্নমুখী ও মূল উধ্বমুখী। এই হচ্ছে আসল বৃক্ষের ছায়া। ঠিক সেইরূপে এই জড় জগতের বৃক্ষটি হচ্ছে চিৎ জগতের বাস্তব বৃক্ষটির প্রতিবিম্ব। ( vi) জলে যেমন বৃক্ষের ছায়া পড়ে, চিন্ময় জগতের ছায়া সেইরূপ জীবের কামনা-বাসনার উপর পড়ে।

১৯। কোন জগতে আলোকের জন্য সূর্য, চন্দ্র বা বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না? সে জগৎটি কিরূপে আলোকিত হয় ?  
উঃ ভগবানের পরম চিন্ময় ধামে আলোকের জন্য সূর্য, চন্দ্র বা বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না, সে জগৎ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অঙ্গকান্তির (ব্রহ্মজ্যোতি) দিব্য আলোকে উদ্ভাসিত।
২০কোন ধাম লাভ করলে জীবকে পুনরায় এই মর্ত্যলোকে আসতে হয়
উঃ ভগবানের চিন্ময় বৈকুণ্ঠধাম বা গোলক বৃন্দাবন লাভ করলে জীবকে পুনরায় এই মর্ত্যলোকে ফিরে আসতে হয় না।
ভগবদগীতা-বিষয়ক
২১জী কি ?  এই জড় জগতে তার স্থিতি কিরূপ ?  
উঃ জীব ভগবানের সনাতন বিভিন্ন অংশ। চিন্ময় ও পরা প্রকৃতিজাত জীব অপরা প্রকৃতি বা জড়া প্রকৃতির বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ফলে, তার মনসহ ছয়টি ইন্দ্রিয়ের দ্বারা প্রকৃতিরূপ ক্ষেত্রে কঠোর সংগ্রাম করছে।
২২জীব কিভাবে একটি স্থুল শরীর থেকে অন্য একটি স্থুল শরীরে প্রবেশ করে ? 
উঃ বায়ু যেভাবে ফুলের গন্ধ নিয়ে অন্যত্র গমন করে, তেমনই জীবাত্মা একটি স্থুল শরীর ত্যাগ করে অন্য স্থুল শরীরে তার জীবনের বিভিন্ন ধারণাগুলি নিয়ে যায়।
২৩জীৰ কোন ইন্দ্রিয়ের দ্বারা কোন বিষয়কে উপভোগ করে ?  
উঃ জীব চক্ষু দ্বারা রূপকে, কর্ণ দ্বারা শব্দ, নাসিকা দ্বারা গন্ধ, জিম্বা স্বাদ ও ত্বক দ্বারা স্পর্শ উপভো করে থাকে।
২৪সমস্ত বেদের জ্ঞাতব্য বিষয় কি ? 
উঃ সমস্ত বেদের জ্ঞাতব্য বিষয় হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণ। তিনিই সমস্ত বেদের বিষয়, বেদান্তকর্তা ও বেদবেত্তা।
২৫জীবের স্মৃতি জ্ঞান এবং বিস্মরণের কারণ কি ?  
উঃ ভগবান পরমাত্মারূপে সমস্ত জীবের হৃদয়ে অবস্থান করছেন, তার থেকে জীবের স্মৃতি জ্ঞান উৎপন্ন ও বিলোপ হয়ে থাকে।
২৬জীব কয় প্রকার ও কি কি ? 
উঃ জীব দুই প্রকার- একটি হচ্ছে ক্ষর, (জড়জগতের প্রতিটি জীব হচ্ছে ক্ষর, এদের নিত্যবদ্ধ জীব বলা হয় এবং অন্যটি হচ্ছে অক্ষর (চিৎজগতের প্রতিটি জীব অক্ষর, এদের নিত্যমুক্ত জীব বলা হয়)।
২৭। ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে পুরুষোত্তম বলা হয় কেন
উঃ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দুই প্রকারের জীব- ক্ষর এর অক্ষর - এই দুই পুরুষের থেকে ভিন্ন তিনি ক্ষরে অতীত এবং অক্ষরের থেকেও উত্তম তাই তাকে বেদেপুরুত্তম" নামে আখ্যাতি করা হয়েছে। তিনি পরমাত্মারূপে সমস্ত বিশ্বকে প্রকাশ করেন ও সমস্ত জীবদের পালন করেন।
২৮। সত্ত্বগুণী, মোণ্ডণী ও রজোগুণী কাদের বলা হয় ?  
উঃ প্রকৃতির তিনটি গুণের মধ্যে সর্বদা জীবের উপর আধিপত্য বিস্তার করার জন্য পরস্পর প্রতিযোগিতা হয় । জীবের উপর যে গুণের ৩ হয় সেই জীবকে সেই গুণসম্পন্ন বলা হয়। এইভাবে জীবের মধ্যে রজ ও তমো গুণকে পরাজিত করে সত্ত্বগুণ যখন প্রবল হয় তখন তাকে সত্ত্বগুণী বলা হয়। জীবের মধ্যে সত্ত্বগুণ ও তমোগুণকে পরাজিত করে রজোগুণ প্রবল হয় তখন তাকে রজোগুণী বলা হয়। জীবের মধ্যে সত্ত্বগুণ ও রজোগুণকে পরাজিত করে তমোগুণ যখন প্রবল হয় তখন তাকে তমোগুণী বলা হয়।
২৯। বিভিন্ন গুণে প্রভাবিত ব্যক্তি মৃত্যুর পর কি শরীর প্রাপ্ত হবেন ?  
উঃ সত্ত্বগুণসম্পন্ন ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার নির্মল উচ্চতর লোক প্রাপ্তি হয়। রজোগুণসম্পন্ন ব্যক্তির মৃত্যুর পর কর্মাসক্ত মনুষ্যকুলে জন্ম হয়। মোগুণসম্পন্ন ব্যক্তি মৃত্যুর পর পশুযোনিতে জন্ম লাভ করে।
৩০বিভিন্ন গুণ থেকে জীবের মধ্যে কি উৎপন্ন হয় ?  
উঃ সত্ত্ব গুণ থেকে জীবের মধ্যে প্রকৃত জ্ঞানের উৎপত্তি হয়। রজোগুণ থেকে জীবের মধ্যে লোভ উৎপন্ন হয়। তমোগুণ থেকে জীবের মধ্যে অজ্ঞানতা, প্রমাদ ও মোহ উৎপন্ন হয়।
৩১এই জগতের দুটি স্বভাবের জীবকে কি বলা হয়
উঃ দেবশ্বভাব ও অসুরম্বভাব।
৩২দৈবী গুণাবলী (দেবগুণ সম্পন্ন) এবং আসুরিক গুণাবলীর প্রভাব কি ?  
উঃ  দৈবী গুণাবলী জীবের মুক্তির অনুকূল এবং আসুরিক গুণাবলী সংসার বন্ধনের কারণ।
৩৩ নরকের তিনটি ঘর কি কি
উঃ কাম, ক্রোধ ও লোভ।
৩৪ আমাদের কোনটি কর্তব্য ও কোনটি অকর্তব্য তা আমরা কিভাবে করব। 
উঃ শাস্ত্রের প্রামাণ্য নির্দেশ অনুসারে আমাদের কর্তব্য ও অকর্তব্য নির্ধারণ করা উচিত।
৩৫। প্রকৃতির তিনটি গুণের দ্বারা প্রভাবিত মানুষ কাদের পূজা করে ?  
উঃ সাত্ত্বিক ব্যক্তিরা দেবতাদের পূজা করে, রাজসিক ব্যক্তিরা যক্ষ ও রাক্ষসদের পূজা করে এবং তামসিক ব্যক্তিরা ভূত-প্রেতাদির পূজা করে।
৩৬। সমস্ত যজ্ঞ, তপস্যা ও দানের যথার্থ ফল কিভাবে লাভ করা যায় ?  
উঃ   ওঁ','তৎ', 'সৎ' বলে সমস্ত যজ্ঞ, তপস্যা, দানাদি ভগবানের প্রীতি  সম্পাদনের জন্য অনুষ্ঠিত করলেই যথার্থ ফল লাভ হয়।
৩৭। কোন প্রকারের যজ্ঞ, তপস্যা ও দানকে অসৎ বলা হয়
উঃ পরমেশ্বর ভগবানের প্রতি শ্রদ্ধা পরায়ণ না হয়ে যে যজ্ঞ, যে দান বা তপস্যা অনুষ্ঠিত হয় তা অসৎ। সেই সমস্ত ক্রিয়া ইহকাল বা পরকাল  কোন কালেই উপকার করে না।
৩৮। ত্যাগ কাকে বলে
উঃ সমস্ত কর্মের ফলত্যাগকে বিচক্ষণ ব্যক্তিগণ ত্যাগ বলেন।
৩৯। সন্যাস কাকে বলে ?  
উঃ কাম্য কমের পবিত্যাগকে সন্ন্যাস বলা হয়।
৪০গুণ অনুসারে ত্যা  কত প্রকার  
উঃ তিন প্রকার  
*** যারা কর্মফল ত্যাগ করে না তাদের কি গতি হয় ?  
উঃ যারা কর্মল ত্যাগ করেন তাদের অনিষ্ট, সুষ্ট ও মিশ্র এই তিন প্রকারের কর্মফল ভোগ করতে হয়।

***  কর্মের আশ্রয় কি ?  
উঃ কারণ, কর্ম ও কর্তা এই তিনটি হচ্ছে কর্মের আশ্রয়।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন