গীতার সারমর্ম নিয়ে ৪০ টি প্রশ্ন ও উত্তর

ভগবদগীতা – বিষয়ক আশা করি নতুনদের গীতার তাৎপর্য বুঝতে সহজতর হবে।

 যজ্ঞ বলতে কি বোঝায়
উঃ যজ্ঞ বলতে ভগবান বিষ্ণুকেই বোঝায়। বেদে বলা হয়েছে “যজ্ঞ বৈ বিষ্ণুমঃ  ভগবানের তুষ্টি বিধানের জন্য কার্যকেই যজ্ঞ বলা হয়।
 মানুষের জীবন ধারণের জন্য  যজ্ঞ  করার প্রয়োজনীয়তা কি?  
উঃ প্রাণীগণ জীবনধারণের জন্য অনুগ্রহণ করে। অন্ন উৎপন্ন হয় বৃষ্টি হওয়রি  ফলেবৃষ্টি হয় যত্ত অনুষ্ঠান করার ফলে। যত্ত অনুষ্ঠিত হয় শাস্ত্র বিধি অনুসারে। তাই মানুষের জীবন ধারণ করার জন্য যজ্ঞ করা প্রয়োজন।
৩। মানুষ কেন অনিচ্ছা সত্ত্বেও পাপাচরণে প্রবৃত্ত হয়?  
উঃ রজোগুণ থেকে কামের উদ্ভব হয় কামনার অতৃপ্তিতে ক্রোধের উৎপত্তি হয়। এইভাবে কামই মানুষকে পাপাচরণে প্রবৃত্ত করায়।
৪। কাম কিভাবে জীবের চেতনাকে জ্ঞানকে আবৃত করে রাখে?  
উঃ অগ্নি যেভাবে ধুমের দ্বারা আবৃত থাকেদর্পণ যেভাবে ময়লার দ্বারা আবৃত থাকে বা গর্ভ যেভাবে জরায়ুর দ্বারা আবৃত থাকেঠিক সেভাবে জীবের চেতনা বিভিন্ন মাত্রায় কামের দ্বারা আবৃত থাকে।
৫। প্রাণীদের মধ্যে কামের আশ্রয়স্থল কোথায় 
উঃ কাম প্রাণীদের মধ্যে তাদের ইন্দ্রিয়সমূহমন এবং বুদ্ধিকে আশ্রয় করে থাকে।
আরোও জানুনঃ
ঘুমনা আসার কারণ ও প্রতিকারঃ এখামে চাপ দিন
মস্তিষ্ক ঠিক ঠান্ডা রাখার উপায়ঃ এখামে চাপ দিন
চুলের যত্ন কিভাবে নিতে হয়ঃ এখামে চাপ দিন

৬। কামকে কিভাবে জয় করা যায়
উ: নিজেকে জড় ইন্দ্রিয়মন এবং বুদ্ধির অতীত আস্থা জেনে চিৎ- শক্তির দ্বারা নিকৃষ্ট বৃত্তিকে সংযত করার দ্বারা কামরূপ দুর্জয় শক্রকে জয় করা যায় ।
৭। ভগবদগীতার জ্ঞান কিভাবে পরম্পরাক্রমে প্রচলিত ছিল
উঃ সৃষ্টির প্রারম্ভে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই জ্ঞান সূর্যদেব বিবস্বানকে দিয়েছিলেন, বিবস্বান মনুকে বলেছিলেনমনু ইক্ষাকুকে বলেছিলেন- এইভাবে পরম্পরা  ক্রমে রাজর্ষিরা এই পরমবিজ্ঞান লাভ করেছিলেন।
৮। ভগবান অজঅর্থাৎ জন্ম-রহিততবে তিনি কিভাবে বারংবার জন্ম  গ্রহণ করেন? 
উঃ ভগবান তার অন্তরঙ্গা শক্তিকে আশ্রয় করে স্বীয় মায়ার দ্বারা তার আদি চিন্ময়রূপে যুগে যুগে অবতীর্ণ হন। জীব কর্মফল ভোগ করতে বাধ্য হয়েনির্দিষ্ট যোনিতে জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু ভগবান তার নিজ ইচ্ছায় স্বজ্ঞানে তার চিন্ময়রূপে অবতীর্ণ হন বা আবির্ভূত হন। তার শরীরের সষ্টি হয় না বরং তাঁর দিব্য শরীরের এই জগতে আবির্ভাব হয়।
৯। কার পক্ষে যোগী হওয়া সম্ভব নয় 
উ: যারা অধিক ভোজন করেনিতান্ত নিরাহারে থাকেএবং অধিক নিদ্রাপ্রিয় বা নিদ্রাশূন্য তাদের পক্ষে যোগী হওয়া সম্ভব নয়।
১০ যোগীর কোন অবস্থাকে সমাধি বা যোগযুক্ত অবস্থা বলা হয় 
উ: যোগী যখন যোগানুশীলন দ্বারা তার চিত্তবৃত্তিকে সম্পূর্ণরূপে নিরোধ করে সমস্ত জড়কামনা থেকে মুক্ত হয়ে আত্মতে-অবস্থান করেনতখন তার সেই অবস্থাকে যোগযুক্ত বা যোগ সমাধি অবস্থা বলে।
১১। কোনো যোগী যদি যোগপথ থেকে চ্যুত হয়ে সিদ্ধিলাভ না করতে পারেতবে তার কি গতি হয় ?  
উঃ এই প্রকার শুভ অনুষ্ঠানকারী পারমার্থবাদীর ইহলোক এবং পরলোকে কোনো দুর্গতি হয় না। এই যোগভ্রষ্ট ব্যক্তি পূণ্যবানদের প্রাপ্য স্বর্গাদি লোকসকলে বহুকাল বাস করার পর এই ধরাধামে কোনো সদাচারী ব্রাহ্মণদের গৃহে অথবা শ্ৰী-সম্পন্ন ধনী বণিকদের গৃহে অথবা জ্ঞানবান যোগীদের বংশে জন্মগ্রহণ করেন। সেই প্রকার জন্মগ্রহণ করার ফলে তিনি পুনরায় তার পূর্বজন্মকৃত পারমার্থিক চেতনায় সিদ্ধিলাভের জন্য যত্নবান হন । তিনি এইভাবে পূর্বজন্মের অভ্যাসবশতঃ যোগসাধনের প্রতি আকৃষ্ট  হন। সেই যোগী এই জন্যে পূর্বজন্মকৃত যত্ন অপেক্ষা অধিকতর যত্ন করে । সাধন করেন এ পাপমুক্ত হয়ে পূর্ব পূর্ব জন্মের সাধন সঞ্চিত সংস্কার দ্বারা সিদ্ধিলাভ করেপরম গতি প্রাপ্ত হন।
১২। সমস্ত প্রকার যোগীদের মধ্যে কোন যোগী শ্রেষ্ঠ ?  
উঃ সমস্ত প্রকার যোগীদের মধ্যে যিনি শ্রদ্ধা সহকারে মদগত চিত্তে অর্থাৎ কৃষ্ণগতচিত্তে শ্রীকৃষ্ণের ভজনা করেন অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণেতেই আসক্ত হয়ে অন্তরে সবসময় তার কথা চিন্তা করেন এবং শ্রীকৃষ্ণের ভজনা করেন তিনি শ্রেষ্ঠ যোগী । তিনি সব থেকে অন্তরঙ্গ ভাবে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ঠাকে।

আরোও জানুনঃ
চুলপড়ার ১৫ টিকারণঃ এখানে ক্লিক করুন
হাঁপানি থেকে মুক্তির উপায়ঃ এখানে ক্লিক করুন
উচ্চরক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসাঃ এখানে ক্লিক করুন

১৩। কোন চার প্রকারের সুকৃতিবান ব্যক্তি ভগবানের ভজনা করেন ?  
উঃ আর্তঅর্থার্থীজিজ্ঞাসু এবং জ্ঞানী- এই চার প্রকারের সুকৃতিবান ব্যক্তি ভগবানের ভজনা করেন।
১৪। চারপ্রকারের সুকৃতিবান ভক্তদের মধ্যে কে শ্রেষ্ঠ   
উঃ চার প্রকার ভক্তদের মধ্যে নিত্যযুক্ত ভগবানে একনিষ্ঠ তত্ত্বজ্ঞানী শ্রেষ্ঠ।
১৫। কোন শ্রেণীর মানুষেরা দেবদেবীর উপাসনা করেন ?  
উঃ যে সমস্ত মানুষদের মন জড় কামনা বাসনার দ্বারা বিকৃত হয়েছে তারা ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে পরিত্যাগ করে অন্য দেব-দেবীর শরণাগত হন। ভগবান  সকলের হৃদয়ে পরমাত্মা রূপে অবস্থান করেন। তিনি তাদের ইচ্ছানুযায়ী সেই সেই দেবতাদের প্রতি ভক্তি সঞ্চার করেন।
১৬। যারা দেবদেবীদের উপাসনা করে তাদেরকে অল্পবুদ্ধি সম্পন্ন বলা হয়েছে কেন ?  
উঃ দেবতাদের উপাসকরা যে ফল প্রাপ্ত হন তা অস্থায়ীতারা তাদের আরাধ্য
দেবলোকে যানযার স্থিতিও অনিত্যবিনাশশীল। তাই তাদেরকে ভগবান অল্পবুদ্ধিসম্পন্ন বলেছেন।
১৭। নির্বিশেষ বা নিরাকারবাদীদের বুদ্ধিহীন কেন বলা হয়েছে ?  
উঃ নির্বিশেষবাদীরা মনে করেন যে ভগবান নির্বিশেষ বা নিকার রূপ থেকে সবিশেষ বা সাকার রূপ পরিগ্রহ করেছেন। তারা তাদের নিত্য অন্য এবং পরম ভাব সম্বন্ধে অবগত নন। তাই তাদেরকে বুদ্ধিহীন বলে বলা হয়েছে।
১৮। সমস্ত মানুষেরা কেন ভগবানকে জানতে পারে না ?  
উঃ যেহেতু ভগবান অল্পবুদ্ধিসম্পন্ন দেব উপাসক এবং বুদ্ধিহীন নির্বিশেষবাদী লোকেদের কাছে নিজেকে স্বীয় অন্তরঙ্গা শক্তি যোগমায়ার দ্বারা আবৃত করে রাখেন। তাই জন্মমৃত্যু-রহিত তার অব্যয় শরীরকে সবাই জানতে পারে না।
১৯। ব্ৰহ্ম কি ?  
উঃ নিত্য বিনাশরহিত জীব হচ্ছে ব্রহ্ম।
২০। অধ্যাত্ব কি ?  
উঃ আত্মার স্বভাবকে বা নিত্য প্রকৃতিকে অধ্যাত্ম বলে
ভগবানের শ্রী কৃষ্ণ কথা, ভগবদগীতা-বিষয়ক, গীতা পাঠ, বাংলা গীতা, গীতার মুল কথা, গীতা সারংশা, গীতার প্রশ্ন, গীতা বাণী,
২১। কর্ম কি 
উঃ জীবসত্তা যখন জড়জাগতিক ভাবনায় আবিষ্ট হয়তখন তার সেই জড়চেতনার প্রভাবে তার নানাবিধ জড়দেহ সৃষ্টি হতে থাকে। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় কর্মযা সেবা’-র বিপরীত। সেবা অপ্রাকৃত, 'কর্ম' জড় অস্তিত্বকে দীর্ঘায়িত করে।
২২। অধিভূত কি ?  
উঃ নশ্বর বা নিয়ত পরিবর্তনশীল জড়া প্রকৃতিকে অধিভূত বলে।
২৩। অধিদৈব কাকে বলে  
উঃ চন্দ্র সূর্য-আদি সমস্ত দেবতাদের অধিষ্ঠাতা অর্থাৎ সমস্ত দেবতাদের  সমষ্টিরূপ বিরাট পুরুষকে অধিদৈব বলে।
২৪। জীবদেহে অধিযজ্ঞ কে ?  কিরূপে তিনি দেহে অবস্থান করেন ? 
উঃ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ হচ্ছেন অধিযজ্ঞ। তিনি প্রতিটি জীবের শরীরে অন্তর্যামী পুরুষ বা পরমাত্মারূপে অবস্থান করেন 
২৫। কিভাবে মৃত্যু হলে ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে প্রাপ্ত হওয়া যাবে এবং কেন ?  
উঃ মৃত্যুর সময় ভগবানকে স্মরণ করে শরীর ত্যাগ করলে অবশ্যই ভগবানকে প্রাপ্ত হওয়া যাবে। কেননা মৃত্যুর সময় যে যেভাবে স্মরণ করে তার দেহত্যাগ করে সে সেইভাবে ভাবিত তত্ত্বকে লাভ করে থাকে।
আরোও জানুনঃ
পিঠের উপরে ব্যথা প্রতিরোধ ও চিকিৎসাএখানে চাপ দিন
শ্বাস নেওয়ার সময় বুক ও পিঠ ব্যথাএখানে চাপ দিন
শিশু ও নবজাতকদের মধ্যে ১০ রোগএখানে চাপ দিন
২৬। মৃত্যুর সময় ভগবানকে স্মরণ করলেই যদি তার ভাবকে প্রাপ্ত হওয়া যায়তবে সারা জীবন সাধন করার কি প্রয়োজন ?  
উঃ মৃত্যু যে কোনো সময় আসতে পারে। সারা জীবন সাধন ভজন করণ ভগবানকে স্মরণ করতে অভ্যাস করতে হয়। তাহলে মৃত্যুর সময় ভগবানকে স্মরণ করতে পারা যাবে।
২৭। সব সময় কি শুধু ভগবানের চিন্তা করতে হবে  
উঃ সবসময় ভগবানের স্মরণ করে তার উদ্দেশ্যেই কর্তব্য কর্ম সম্পাদন করা উচিত।
২৮। কি করলে পুনর্বার এই দুঃখময় অনিত্য সংসারে আসতে হবে না  
উঃ ভগবানকে লাভ করে তার ধামে যেতে পারলে পুনর্বার এই দুঃখময় অনিত্য জগতে ফিরে আসতে হবে না।
২৯। কোন্ সময় দেহত্যাগ করলে এই জড় জগতে আর ফিরে আসতে হয় নাএবং কোন সময়ে দেহত্যাগ করলে পুনর্বার ফিরে আসতে হয় ?  
উঃ অগ্নিজ্যোতিশুক্লপক্ষশুভদিন ও উত্তরায়নে দেহত্যাগ করলে জীব  ব্ৰহ্মলাভ করে এবং আর এই জগতে ফিরে আসে না। কিন্তু ধুমরাত্রি, কৃষ্ণপক্ষ ও দক্ষিণায়নের ছয় মাসের মধ্যে দেহত্যাগ করলে জীবের মর্ত্যলোকে পুনর্জন্ম হয়ে থাকে।
৩০। ভগবানের ভক্তরা কোন সময় দেহত্যাগ করে ভগবানকে প্রাপ্ত হন 
উঃ ভক্তরা সবসময় ভক্তিযোগ অবলম্বন করেকৃষ্ণচেতনায় মগ্ন থাকেন। তাই যে কোনো সময় দেহত্যাগ করলেও তারা দেহত্যাগের পর ভগবদ্ধাম প্রাপ্ত  হন।
৩১। এমন কি একটি উপায় আছে যার ফলে বেদপাঠযজ্ঞতপস্যাদান আদি সবকিছুর ফল প্রাপ্ত হতে পারা যায়  
উঃ ভক্তিযোগ অবলম্বন করলে বেদপাঠযজ্ঞানুষ্ঠানতপস্যাদান আদজ যতপ্রকার জ্ঞান ও কর্ম আছে সমস্ত কিছুর ফল লাভ করা যায় এবং আদি ও পরম ধাম প্রাপ্ত হওয়া যায়।
৩২। কারা ভগবানকে অবজ্ঞা করেন ও কেন ?  
উঃ মূর্খ মানুষেরা ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে সাধারণ মানুষ জ্ঞান করে অবজ্ঞা করে। কেননা তারা ভগবানের পরমভাব সম্বন্ধে অবগত নয় এবং শ্রীকৃষ্ণ যে সর্বভূতের মহেশ্বর তা জানে না।
৩৩। ত্রিগুণাত্বিকা মায়াশক্তি বিশ্বচরাচর সৃষ্টির একমাত্র কারণ। কিন্তু কার অধ্যক্ষতায়?  
উঃ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অধ্যক্ষতায় তাঁর ত্রিগুণাত্মিকা মায়াশক্তি এই চরাচর জগতের সৃষ্টি করে থাকেন।
৩৪। যারা মোহবশতঃ ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে সাধারণ মানুষজ্ঞানে অবজ্ঞা করেন তাদের কি গতি হয়  
উঃ এইরূপ রাক্ষসী ও আসুরিক মনোভাবাপন্ন ব্যক্তিদের মুক্তিলাভের আশা,  তাদের সকাম কর্ম এবং জ্ঞানলাভের প্রয়াস সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়।
৩৫। যারা বেদবিহিত যজ্ঞ অনুষ্ঠান করে তার পুণ্যফল স্বরূপ স্বর্গলোক প্রাপ্ত হন তাদের গতি কি হয় ?  
উঃ তারা বিপুল ঐশ্বর্য্যে সমৃদ্ধ স্বর্গলোক উপভোগ করে পুণ্যক্ষয় হলে আবার মর্ত্যলোকে ফিরে আসে।
আরোও জানুনঃ
বুকে ব্যথার কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসাএখানে চাপ দিন
শ্বাস নেওয়ার সময় বুক ও পিঠ ব্যথাএখানে চাপ দিন
পিঠ ব্যথাঃ উপশম ও ঘরোয়া চিকিৎসাএখানে চাপ দিন
৩৬। অনন্যভাবে ভগবানের চিন্তায় মগ্ন হয়ে যাঁরা তার উপাসনা করেনভগবান তাদের জন্য কি করেন ?  
উঃ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাদের সমস্ত অভাব পূর্ণ করেন ও তাদের প্রাপ্ত বস্তুর সুরক্ষা করেন।
৩৭। ভক্তিপূর্বক যে কোনো দেবতার পূজা করার দ্বারা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পূজা হয় কি? 
উঃ হ্যাভক্তিপূর্বক অন্যদেবতাদের পূজা করলে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পূজা হয়,
কিন্তু তা অবিধিপূর্বক পূজা বলে ভগবান স্বয়ং অভিহিত করেছেন।
৩৮। যে কোনো দেবতার পূজা করলে একই গতি অর্থাৎ ভগবানকে লাভ করা যায় কি ?  
উঃ না। যে কোনো দেবতাকে পূজা করে একই গতি বা ভগবানকে প্রাপ্ত হওয়া যায় না। যারা দেবতাদের উপাসনা করেন তারা দেবলোক প্রাপ্ত হন। ভূত প্রেতাদির উপাসকেরা ভূতলোকে গমন করেন এবং পিতৃপুরুষের উপাসকেরা অনিত্য পিতৃলোক লাভ করে থাকেন। কিন্তু যিনি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উপাসনা করেন তিনি তাকে লাভ করে তার ধামে গমন করেন।
৩৯। শ্রীকৃষ্ণকে মাছমাংস ইত্যাদি ভোগ নিবেদন করা হয় না কেন  
উঃ শ্রীকৃষ্ণ এইসব অবাঞ্ছিত বা প্রতিকুল পদার্থ গ্রহণ করেন না। কেউ যদি তাকে ভক্তিসহকারে পত্রপুষ্পফলজল অর্পণ করে তিনি তা গ্রহণ করেন । তাই শ্রীকৃষ্ণকে শাকসজিফলদুধজল ইত্যাদি সাত্ত্বিক পদার্থ নিবেদন করা হয় ।
৪০। কিভাবে কর্ম করেও কর্মের শুভ ও অশুভ ফল থেকে মুক্ত হয়ে কর্মবন্ধন থেকে নিস্তার লাভ করা যাবে ?  
উঃ যা কর্ম করা হয়যা আহার করা হয়যা পূজা করা হয়যা দান করা হয়, যা তপস্যা করা হয় সে সমস্ত কর্মের ফল ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে অর্পণ করলে কর্মের শুভ ও অশুভ ফল থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। ফলতঃ কর্মবন্ধন থেকে এভাবে নিস্তার লাভ করা যাবে।
***ভগবান কেন তার সৃষ্ট সমস্ত জীবের প্রতি সমভাবাপন্ন নন তাহলে কেউ
সুখে কেউ দুঃখে থাকে কেন ভগবান তাঁর ভক্তের পক্ষ গ্রহণ করেন
কেন 
উঃ ভগবান সমস্ত জীবকে সমান দৃষ্টিতে দেখেন। তার অর্থ হচ্ছে প্রতেকটি জীবের কর্ম অনুসারে যথাযোগ্য ফল তিনি তাকে প্রদান করে থাকেন। ভগবানের কেউ প্রিয় নয় বা অপ্রিয় নয়। কিন্তু যারা ভক্তি সহকারে ভগবানের উপাসনা করেন তারা ভগবানের কাছে বিশেষভাবে প্রিয়। কেননা সেই ভজনশীল জীব-সকল ভগবানে অবস্থান করেন এবং ভগবান সেই জীবদের হৃদয়ে বাস করেন।
***অনন্য ভক্তিসহকারে ভজনকারী ব্যক্তি যদি পূর্ব সংস্কারের ফলে ভুলবশতঃ দুরাচার কর্মে প্রবৃত্ত হয় তাহলে তার কি গতি হবে  
উঃ এই প্রকারের মানুষকেও সাধু বলে মনে করতে হবে কেননা তিন যথা মার্গেঅর্থাৎ ভগবদ্ভক্তির মার্গে অবস্থিত আছেন। সাময়িক ভ্রান্ত  সত্ত্বেও ভগবানের কৃপার প্রভাবে তিনি শীঘ্রই ধর্মাত্মায় পরিণত হন এবং শান্তি লাভ করেন। তিনি ভক্ততাই তার কখনো বিনাশ হবে না।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন